জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৬ উপলক্ষে আমি এ মহান নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। এ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল শিশু-কিশোরকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ শৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত হৃদয়বান, মানবদরদি কিন্তু অধিকার আদায়ে আপসহীন। স্কুল জীবন থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি পরিলক্ষিত হয়। চল্লিশের দশকে এই তরুণ ছাত্রনেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে; সহ্য করতে হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন। তবুও তিনি কখনো অধিকারের প্রশ্নে আপস করেননি। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাঙালি জাতির এই অবিসংবাদিত নেতা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের আপামর জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করে বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য আজ এদেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। সামগ্রিক বিচারে বঙ্গবন্ধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি এক অনন্যসাধারণ ইতিহাস। তিনি নিজগুণে ও কর্মে সমাজ, দেশ ও সমকালীন বিশ্বে চির ভাস্বর হয়ে আছেন। তিনি কেবল বাঙালির নন, বিশ্বে নিপীড়িত-শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির দূত।

স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শৈশব থেকেই তাদের মধ্যে সৎ গুণাবলির উন্মেষ ঘটাতে হবে। জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা, সততা, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা নিজেদের গড়ার পাশাপাশি দেশ ও মানুষকে ভালোবাসতে শেখে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। কারণ এ দিবসটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে আজকের প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীতে জাতি গঠনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ এবং সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমি দলমতনির্বিশেষে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই।

আমি জাতির পিতার ৯৭তম জন্মদিবসে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর